আচার্য্য শৈলজারঞ্জন মজুমদারের ১২৫ তম জন্মবার্ষিকী ২০২৫ সালে। এই উপলক্ষ্যে তাঁর পরিবারের সদস্যগণ একটি সমিতি গঠন করে শান্তিনিকেতন ও কলকাতার শিল্পীদের একত্রিত করে  দু’ দিন ব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ‘অগ্নিরক্ষার ঋত্বিক শৈলজারঞ্জন সংগীত সায়হ্নিকা’ আয়োজন করেছেন মার্চ মাসের ২৪ ও ২৫ তারিখ শান্তিনিকেতনে এবং  এপ্রিল মাসের ৪ এবং ৫ তারিখ কলকাতায় ডঃ ত্রিগুণা সেন অডিটোরিয়ামে (যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ)।

এই প্রয়াসগুলির উদ্দেশ্য সংস্কৃতিমনস্ক মানুষকে শৈলজারঞ্জনের বিষয়ে এবং সেই সুত্রে রবীন্দ্রনাথের কিছু বিশেষ ভাবনার সঙ্গে পরিচিত করা মনোরঞ্জনের মধ্যে দিয়ে।

রবীন্দ্রসংগীতের সর্বজনবিদিত শিল্পী কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের, সুবিনয় রায়, নীলিমা সেন, মায়া  সেন, অশোকতরু বন্দ্যোপাধ্যায়, গীতা ঘটক প্রমুখ  শিল্পীদের কিংবদন্তী স্বরূপ গুরু শৈলজারঞ্জন মজুমদার।  দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতন ছেড়ে যাবার পর গানের ব্যাপারে রবীন্দ্রনাথের ভরসার পাত্র হয়ে ওঠেন শৈলজারঞ্জন। রবীন্দ্রনাথ তাঁকে ‘গীতাম্বুধি’ বলেছেন এবং ১৯৩৯ সালে সংগীতভবনের অধ্যক্ষ নিযুক্ত করেন। শৈলজারঞ্জন ১৫০ টির বেশী রবীন্দ্রসংগীতের স্বরলিপি করেছেন। .১৯৬০ সালে শান্তিনিকেতনের কাজ থেকে স্বেচ্ছাবসর গ্রহন করে তিনি কলকাতায় বিভিন্ন উপায়ে বিশুদ্ধ ভাবে রবীন্দ্রসংগীতের শিক্ষণ ও প্রচারে নিজেকে নিয়োজিত করেন এবং তার প্রধান উদাহরণ তাঁর ‘সুরঙ্গমা’ শিক্ষায়তনকে রবীন্দ্রসংস্কৃতির কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলা।

প্রথম অনুচ্ছেদে উল্লিখিত অনুষ্ঠানগুলিতে বিভিন্ন ভাবে শৈলজারঞ্জনের জীবন, কর্ম ও ভাবনার কয়েকটি দিকের উপর আলোকপাত করা হবে। 

পঞ্চাশের দশকের শান্তিনিকেতনের নৃত্যশৈলীর অনুসরণে শ্যামা নৃত্যনাট্য পরিবেশন করবেন শান্তিনিকেতনের শিল্পীবৃন্দ শান্তিনিকেতনের প্রাক্তনী অশীতিপর নির্দেশিকা শ্রীমতী দিয়ালী লাহিড়ীর তত্ত্বাবধানে । শ্রীমতী দিয়ালী লাহিড়ী দেশে এবং বিদেশে শৈলজারঞ্জনের নির্দেশনার শ্যামা চরিত্রে নৃত্যাভিনয় করেছেন।  

রবীন্দ্রনাথের  ‘ভানুসিংহের পদাবলী’ অবলম্বনে শৈলজারঞ্জন ও ইন্দিরা  দেবীর পরিকল্পিত ‘ শোনো কে বাজায়’ নৃত্যনাট্য অভিনয় করবেন কলকাতার ‘সুরঙ্গমা’ শিক্ষায়তন, স্বনামধন্য নৃত্য গুরু শ্রীমতী পূ্র্ণিমা ঘোষের নির্দেশনায়। 

রবীন্দ্রনাথের যে সব গান রচনায় শৈলজারঞ্জনের অবদান ছিল তার কিছু গান নেপথ্য কাহিনী এবং উপযুক্ত নৃত্য সহযোগে মঞ্চস্থ করা হবে।

রবীন্দ্রসংগীতে সুরান্তর বিষয়ে একটি আলেখ্য পরিবেশিত হবে, তাতে প্রচলিত স্বরলিপি ছাড়াও যে সব সুর এবং গান শৈলজারঞ্জনের কাছে রক্ষিত ছিল তার কিছু গাওয়া হবে।

এই উপলক্ষ্যে  শৈলজারঞ্জনের পরিবারের সদস্য বিশিষ্ট এসরাজ শিল্পী শুভায়ু সেন মজুমদার বিশেষভাবে এই অনুষ্ঠানের জন্যই  প্রস্তুত করা সৃজনশীল সঙ্গীত পরিবেশন করবেন এবং যে এসরাজটি শৈলজারঞ্জনকে স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ দিয়েছিলেন সেই যন্ত্রটিও শুভায়ু ব্যাবহার করবেন ।

শৈলজারঞ্জনের স্বকন্ঠে গীত রবীন্দ্রসঙ্গীতের কিছু অপ্রকাশিত ও দুষ্প্রাপ্য রেকর্ডিং শোনান হবে।

শৈলজারঞ্জনের বিভিন্ন বয়সে বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে তোলা আলোকচিত্রের প্রদর্শনী থাকবে প্রেক্ষাগৃহের বাইরে।

দুটি গ্রন্থ প্রকাশিত হবে – একটিতে তাঁর অপ্রকাশিত ও  প্রকাশিত কিছু সাক্ষাৎকার একত্রিত হয়েছে আর অন্যটি তাঁর সম্বন্ধে বহু মানুষের কিছু অপ্রকাশিত ও  প্রকাশিত রচনার সংগ্রহ ।

এই অনুষ্ঠানগুলির জন্য কোনো প্রবেশ মূল্য ধার্য্য করা হয়নি যাতে সহজে উতসাহী মানুষের কাছে পৌঁছন যায়। 

~আচার্য্য শৈলজারঞ্জন মজুমদার ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন সমিতি 

Share: